Md. Morshedur Rahman / Oil Lamp

 Oil Lamp Collection

আমি মোঃ মোর্শেদুর রহমান। ডাক নাম মিলন। খুব ছোটবেলায় দাদার বাড়িতে যখন বেড়াতে যেতাম কাচেঁর তৈরী কুপি প্রথম দেখেছিলাম। তখন সেই কুপির আলোতেই সারারাত দাদাভাই তার অসাধারণ পুঁথির বিভিন্ন কাহিনি পাঠ করে আমাদের শুনাতেন। আমাদের দেশের বাড়িতে কারেন্ট না থাকায় সন্ধ্যার পর এই কুপিই ছিল আলো প্রজ্জলনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বস্তু। গ্রামের বাড়িতে কুপির সেই মিষ্টি আলো সত্যিই মনোমুগ্ধকর ছিল। মনে হতো কালো ঘুটঘুটে অন্ধকারের মধ্যে এক টুকরো চাঁদ । খুব ছোটবেলা থেকেই এই কুপির আলোর প্রতি সৃষ্টি হয়েছিল এক অন্যরকম ভালোলাগা এবং ভালোবাসা। বুঝতে পারার পর থেকেই মনে জাগলো কেননা এই কুপি আমার সংগ্রহে রাখি। তখন থেকেই সংগ্রহের নেশা মাথায় চাপলো। তারই প্রেক্ষিতে আমার সংগ্রহের প্রথম কুপিটা আমি আমার দাদার বাড়ি থেকেই সংগ্রহ করি। আমি যেখানেই যাই না কেন সেখানকার স্থানীয় বাজারে সময় সুযোগ করে খোঁজ নিতেই হবে যে সেখানে কোন কুপি বাতি পাওয়া যায় কিনা। এ যেন এক অন্যরকম নেশা।  নতুন কিছু পেলেতো কথাই নেই যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেলাম। একেক   অঞ্চলের কুপি একেক রকম। সেটা কুপির হাতল, গলা, শরীর ও মাথার পরিবর্তনটা খেয়াল করলে বুঝা যায় খুব সহজেই। এখন পর্যন্ত প্রায় ৮৭ ধরনের কুপি আমি সংগ্রহ করতে পেরেছি। এই কুপিগুলো বেশিরভাগই  মাটির, পিতলের, টিনের, তামার এবং কাঁচের তৈরি। কুপিগুলো দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি কিছু কিছু কুপির  নকশাগুলো অসাধারণ।  নিজের পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয় স্বজনদের সহযোগিতায় আমার সংগ্রহ আরো সম্মৃদ্ধ হয়েছে। দিন দিন কারেন্ট এর ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় আজকাল এই কুপির ব্যবহার নাই বললেই চলে। হয়তো আগামী প্রজন্ম কুপি কি সেটাই চিনবেনা বা জানবেনা। খুব ইচ্ছে থেকেই আমার এই সংগ্রহ যেন আগামীর প্রজন্মকে এর সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে পারি, তবেই এই সংগ্রহের সার্থকতা আসবে। পেশাগত পরিচয় হল আমি একজন সিনিয়র নৃত্যশিল্পী।  গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এর অধীনে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে কর্মরত আছি। সব মিলিয়ে তৃপ্তি তখনই পাই নিজের পরিচয়টা একজন সংগ্রাহক হিসেবে আত্মপ্রকাশ পায়।

























1 comment: